পুরনো ঢাকার পুনর্নির্মাণ প্রকল্প: কীভাবে বাস্তবায়ন করবে সরকার?

ইসলাম টাইমস ডেস্ক:  অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা পুরনো ঢাকার ভবনগুলোকে পুনর্নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেছে সরকার।

পুরনো ঢাকার অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত অংশগুলোকে নতুনভাবে পরিকল্পনার আওতায় এনে পুনর্নির্মাণ করা হবে বলে শনিবার এক অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেন বাংলাদেশের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বিবিসি বাংলাকে রেজাউল করিম বলেন, এই ‘রি-ডেভেলপমেন্ট’ প্রজেক্ট অনুযায়ী পুরনো ঢাকার এক একটি এলাকাভেদে অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের জায়গায় নতুন ভবন নির্মাণ করে দেয়া হবে।

“ঐ এলাকার মেয়র, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি নিয়ে সবার সাথে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণ করে দেয়া হবে,” বলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, পুরান ঢাকায় দীর্ঘদিন অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত অনেক ভবন রয়েছে, যার অনেকগুলোর বয়সই ১০০ বছরের বেশি।

“সেগুলোর অধিকাংশই বর্তমান সময়ের যুগোপযোগী না, রাস্তাঘাট নেই, বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির ব্যবস্থা ভালো নাই। কোনো দুর্ঘটনা হলে জরুরি সাহায্য পৌঁছানোর ব্যবস্থাও ভাল নয়।”

তবে এই পরিকল্পনা কবে থেকে বাস্তবায়ন শুরু হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী।

“সম্প্রতি ঢাকায় একটি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটার পর রাজউকের ২৪টি দল পরিদর্শনে রয়েছে। এই পরিদর্শন শেষ হওয়ার পর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে পুরানো ঢাকার মানুষের সাথে যোগাযোগ করবো।”

২১শে ফেব্রুয়ারি পুরনো ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নতুন ভবন তৈরির অর্থায়ন কীভাবে হবে?

পুরনো ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে তার জায়গায় আধুনিক ভবন নির্মাণ করার অর্থায়ন কীভাবে হবে – সে প্রশ্নের জবাবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী জানান, সমন্বয়ের ভিত্তিতে এই প্রকল্পের অর্থায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

“এই প্রকল্পের অর্থায়ন সম্পূর্ণরূপে যে সরকার করব, সেরকমও নয়।”

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী জানান, বাড়ির মালিক, হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সমন্বয় করে এই প্রকল্পের অর্থায়নের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তবে সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

ঢাকায় গৃহায়ন সঙ্কটের মূল সমস্যা মনে করা হয় ‘সুশাসনের অভাবকে’।

জমির মালিক, ভবনের মালিক থেকে শুরু করে রাজউক এবং অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের ভবন নির্মাণ এবং অবৈধ ভবন অনুমোদনের সাথে জড়িত দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্ট থাকারও অভিযোগ পাওয়া যায়। এমন পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কতটা সম্ভবপর হবে?

এই প্রশ্নের জবাবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, “আমার মনে হয়, বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে নানারকম শিক্ষা থেকে মানুষ সচেতন হয়।”

সম্প্রতি কয়েকটি দুর্ঘটনার পর মানুষ সচেতন হয়েছে বলে আশা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশের, বিশেষ করে ঢাকা মহানগরীর সাধারণ মানুষ সচেতন হয়ে উঠেছেন বলে আমার বিশ্বাস।”

সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ভবন নির্মাতা এবং বাড়ির মালিকরাও ‘সংকীর্ণ চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে আসছেন’ বলে মনে করেন মি. করিম।

সূত্র: বিবিসি

পূর্ববর্তি সংবাদবিরোধীদলীয় নেতার বাড়ি পাহারা, জিএম কাদের উত্তরসূরী
পরবর্তি সংবাদবঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ