দেশপ্রেম ও শ্রদ্ধা প্রকাশে মসজিদে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া কি জরুরি? (ভিডিও)

ওয়ারিস রব্বানী ।।

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস। এ দিনে স্বাধীনতার ইতিহাস চর্চা ও দেশপ্রেমমূলক বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান উদযাপন করা হয়। সেসব অনুষ্ঠানের চিত্র-ভিডিও এবং খবর সংবাদপত্রে প্রচারও হয়। গত ২৬ মার্চ (মঙ্গলবার)স্বাধীনতা দিবসে একটি বিশেষ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, টুপি-পাঞ্জাবি পরিহিত একদল মাদরাসা ছাত্র (এরা কোনো আলিয়া কিংবা কওমি মাদরাসার ছাত্র হতে পারে) মসজিদে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাইছে। ওই মজমার সামনের সারিতে উল্টো করে দাঁড়ানো ছিল সম্ভবত শিক্ষকরা। ছাত্রদের তুলনায় তাদের বয়স একটু বেশি মনে হয়েছে।

মসজিদে এভাবে দলবদ্ধ হয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযযোগ মাধ্যমে  ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকে। অনেকেই মসজিদে এভাবে সঙ্গীত গাওয়ার বিষয়টিকে আপত্তিকর ও মসজিদের জন্য অবমাননাকর হিসেবেও চিহ্নিত করেছেন। এ অনুষ্ঠানটি এবারের স্বাধীনতা দিবসেই অনুষ্ঠিত হয়েছে না কি আগের কোনো অনুষ্ঠানের ভিডিও এ দিনে পোস্ট হয়েছে, এ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এটাও জানা যায়নি, এটা  দেশের ঠিক কোন মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মসজিদ নামাজ পড়ার ঘর। এখানে নামাজের পাশাপাশি তেলাওয়াত-ইবাদত, তাসবিহ, যিকির এবং একান্তই দীনি আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয় কখনো কখনো। এবং সেটিও হয় ইবাদত হিসেবেই। কোনো কোনো সময় এ জাতীয় ধর্মীয় আলোচনার আগে-পরে ধর্মীয় ভাব ও বক্তব্য সংবলিত নাশিদ (হামদ-নাত-গজল) গাওয়া হয়। কিন্তু একশ ভাগ দুনিয়াবি কোনো মজমা-বৈঠক অথবা ইসলাম ও কুরআন-হাদিস সংশ্লিষ্ট নয়- এমন কোনো গান মসজিদে গাওয়া হয় না। মসজিদের পবিত্রতা, সম্মান ও মর্যাদার জন্যই এ নিয়ম মান্য করা হয়। ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনাও এরকমই। সেখানে মসজিদে এভাবে দলবদ্ধ কোরাস সুরে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলেই মনে করেন ওলামায়ে কেরাম। ঢাকার কয়েকজন আলেমের সঙ্গে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে।

ওলামায়ে কেরামের ভাষ্য অনুযায়ী, মসজিদ এবং মাদরাসাতেও (যেখানে দীনি ইলম ও ইবাদত শেখানো হয়) সাধারণ কোনো সঙ্গীত গাওয়ার প্রয়োজন ও সুযোগ নেই। এটা ইবাদত ও দীনি ইলমের চর্চার পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যশীল নয়।

আলেমরা মনে করেন, দেশপ্রেমের প্রকাশ এবং মুক্তিযুদ্ধে প্রাণদানকারী মানুষদের জন্য শ্রদ্ধা ও শুভ কামনার লক্ষ্যে এমন কোনো পদ্ধতি সকল জায়গার জন্য (মসজিদ-মাদরাসাসহ) অপরিহার্য হওয়া উচিত নয়, যা সব ইবাদতের পরিবেশের জন্য মানানসই নয়। বরং পরিবেশ ও ক্ষেত্রের সঙ্গে মিল রেখে এ বিষয়ে যথাযথ আচরণের চর্চা চলতে পারে। মসজিদ-মাদরাসায় দেশ ও দেশের তরে জীবনদানকারীদের জন্য দোয়া-মুনাজাত করলে সেটাই বরং অধিকতর কল্যাণকর হয়। মুসলমান মাত্রই বিশ্বাস করেন, দোয়া- মুনাজাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হীতাকাঙ্ক্ষা ও শ্রদ্ধা অন্য কোনো আচার-অনুষ্ঠানে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। অন্তত ইবাদতের জায়গা মসজিদ-মাদরাসার সঙ্গে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতা চর্চায় দোয়ার বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

ঢাকার আলেম রাশিদুল হক বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখুন, মসজিদে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার বিষয়টি ধর্মপ্রাণ মুক্তিযোদ্ধারাও মেনে নেবেন না। তারাও জানেন, মসজিদের পবিত্রতার সঙ্গে এমন অনুষ্ঠান মিলে কি না। বরং এটা একটা অতি উৎসাহমূলক আচারের নজির সৃষ্টি করেছে। যা সামনে বহু রকম বিশৃঙ্খলা, অনৈক্য ও প্রশ্নের মুখে মানুষকে ফেলে দিতে পারে। প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের উচিত- এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে একশ্রেণির অতি উৎসাহীকে নিবৃত্ত করা। সমাজের সকল ধর্মপ্রাণ মহল, বিশেষত বীর মুক্তিযোদ্ধারা মসজিদে এ জাতীয় অনুষ্ঠান থেকে অতি-উৎসাহীদের নিবৃত্ত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন।

অবশেষে রবি ঠাকুরের জিকির মসজিদে প্রবেশ করিল!আহ,জাতীয়তাবাদ!তুমি এ জাতিকে মুশরিক বানিয়ে ছাড়লে।অথচ এ জাতীয় সংগীতে অনেক কুফুরী বাক্য রয়েছে।যেমন "মাগো" মা-বাবা বাদই দেওয়া হল।মসজিদে বসে আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমার পরে ঠেকাই মাথা!এর উপরেও ছাত্ররা আমল করবে গুটিকয়েক হুজুরের নেতৃত্বেই‌।আল্লাহর ঘর মসজিদ নিয়ে এই ফাইজলামি কেন??

Posted by Zahidul Islam on Tuesday, March 26, 2019

পূর্ববর্তি সংবাদহিন্দি সিরিয়াল দেখে স্বামীকে হত্যার কৌশল শিখেছেন স্ত্রী!
পরবর্তি সংবাদফের গাজায় বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল