মশা নিয়ে ভাববেন কোনো মশাই?

ওয়ারিস রব্বানী ।।

কয়েক মাসের বেশি সময় ধরে মশার উৎপাত পুরো রাজধানী জুড়েই। কিন্তু মশা নিধন কিংবা নিয়ন্ত্রণের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে- এমন দৃশ্য চোখে পড়েনি। কোথাও কোনো গলির ফাঁক-ফোকরে কিছু মশামারা ওষুধ যদি কেউ ছিটিয়েও থাকে তার কোনো বাস্তব প্রভাব মহানগরীতে নেই। যেন মশার উৎপাত নিয়ে মশার বংশ-বিস্তারের এই উন্নয়ন নিয়ে মাথা ঘামানোর কারও কোনো প্রয়োজনই নেই।

তিন-চার বছর আগেও শীতে কিংবা শীতের শুরুতে অথবা বছরের কোনো কোনো সময়ে ফগার মেশিনের আওয়াজে পাড়া-মহল্লার গলিপথ মুখর হয়ে উঠত। বিকট আওয়াজ আর ধুয়ার পিছে পিছে ছুটতো ছোট্ট শিশুরা। এখন আওয়াজও নেই, ধুয়াও নেই। মশার উৎপাত নিয়ে ভাবার লোকও যেন নেই। সিটি কর্পোরেশনের এ দায়িত্বটি পালনে গরজও দেখা যায় না।

সম্প্রতি খবর বেরিয়েছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশক নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে। বলা হয়েছে, বিমানবন্দরের পাশাপাশি নগরীর অন্যান্য এলাকাতেও এই ক্রাশ প্রোগ্রাম চলবে। ১০ দিনের ক্রাশ প্রোগ্রামে ঢাকার মশাদের ‘বাড়িছাড়া’ করার সর্বাত্মক উদ্যোগ নেওয়া হবে। অবশ্য যদি এতে মশাদের ভীতি কিছু ছড়ায়। ওষুধবিহীন আওয়াজ কিংবা অন্তসারশূন্য ক্রাশ প্রোগ্রামে ঢাকার মশারা নড়েচড়ে বসার পর্যায়ে আছে বলে মনে হয় না।

অনেকেই বলেন, সিটি কর্পোরেশনের এখন অনেক কাজ, রাস্তাঘাট, ড্রেন-কালভার্ট, উড়াল সেতু, পথচারী সেতু- কত কিছু নির্মাণ করতে হয়। মশার মতো তুচ্ছ ব্যাপারে চোখ দেওয়ার সময় কই! উন্নয়নের মোটা উৎসব চলছে। চিকন ও ক্ষুদ্র মশাদের ইস্যু সেখানে জায়গা পাওয়া কঠিন হওয়ারই কথা। কিন্তু হুল-ফুটানো মশার অত্যাচার আর ডেঙ্গু রোগের এই বাড়-বাড়ন্ত প্রকোপের সময় মশাদের ব্যাপারে আন্তরিক মনোযোগ দিলে নগরবাসীরা একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারতেন।

সামনে রমজান আসছে। ইফতার-তারাবিহ, সাহরির সময়গুলোতে মশাদের আধিপত্য চলতে থাকলে মহানগরীর বাসিন্দাদের দুর্ভোগের আর অন্ত থাকবে না। বিত্তবানেরা ঘর বন্ধ করে এরোসল ছিটিয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ নিশ্চিত থাকতে পারেন। গরিব-গুরবো মানুষদেরই যা বিপদ! রাস্তাঘাট, ঘর-কামরা, অফিস-কাচারি- কোথাও রেহাই নেই তাদের। মশার দাপটে অস্থির ঠাস্ ঠা্স্ চলছেই।

সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নের জোয়ারে মশাদের মতো তুচ্ছ বিষয়ে একটু বরাদ্দ-টরাদ্দ, একটু নড়াচড়া থাকলে ক্ষতি কি!

পূর্ববর্তি সংবাদভারত সীমান্তে হঠাৎ চীনের সৈন্য মোতায়েনে উত্তেজনা
পরবর্তি সংবাদমুফতী মুহাম্মদ তাকী উসমানী: জীবনের বাঁকে বাঁকে