‘তোমরা আমার বন্ধু, তোমাদের নামাজের সময় আমি পাহারা দেবো’

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের মসজিদে খ্রিস্টান জঙ্গির বর্বরতম হামলায় ৪৯ জন মুসুল্লি শহিদের ঘটনায় বিশ্বের সকল মানবতাবাদী মানুষ সহমর্মিতা জানিয়েছেন। তেমনই একজন যুক্তরাজ্যের ৫৭ বছর বয়সী অ্যান্ড্রু গ্রেস্টোন। তিনি স্থানীয় মদিনা মসজিদের সামনে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন- ‘তোমরা আমার বন্ধু। তোমাদের নামাজের সময় আমি পাহারা দেব।’

মুসলমানদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। অ্যান্ড্রু গ্রেস্টোন বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি, নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলা হয়েছে। যদি ব্রিটিশ মুসলমানদের জুমার নামাজে এমনটা হতো, তবে কী ভয়ংকর হতো, সেটা ভেবে আমি শিউরে উঠি। এ ঘটনায় আমরা কীভাবে সাড়া দিতে পারি, তা নিয়ে ভাবতে থাকি। হয় ভয়, না হয় বন্ধুত্ব দিয়ে এমন পরিস্থিতিতে সাড়া দেওয়া যায়। আমি স্থানীয় মসজিদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। তাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাইলাম, তারা আমার বন্ধু।’

অ্যান্ড্রু বলেন, লেভেনশুলম মিশ্র ও বহু সংস্কৃতির মানুষের এলাকা। তবে এখানকার মানুষ বন্ধুত্বের পথই বেছে নেবে। তিনি স্থানীয় মদিনা মসজিদের বাইরে একটি প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে এখানকার মুসলমানদের প্রতি বন্ধুত্ব ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেন। ওই প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘তোমরা আমার বন্ধু। তোমাদের নামাজের সময় আমি পাহারা দেব।’

অ্যান্ড্রু বলেন, ‘আমাকে সবাই স্বাগত জানিয়েছেন। প্রথমে অবশ্য কেউ কেউ ভেবেছিলেন, আমি মনে হয় কোনো প্রতিবাদকারী। পরে তাঁরা প্ল্যাকার্ডের লেখা পড়ে ও আমার হাসিমুখ দেখে বুঝেছেন যে আমি তাদের বন্ধু হিসেবে এখানে দাঁড়িয়েছি। অনেকেই আমার সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। কেউ কেউ আবার আমার জন্য চিকেন বিরিয়ানি পাঠিয়েছেন।’

মদিনা মসজিদের ইমাম জাফর ইকবাল বলেন, নামাজের সময় অ্যান্ড্রুর এই আবেগময় কাজ তিনি দেখেছেন। ভেতরে থাকা মুসল্লিরা তাঁর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের বেশির ভাগ মানুষ অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও ভালোবাসা দেখাতে অভ্যস্ত। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে, তারা সমাজের খুবই ক্ষুদ্র অংশ। তারা খারাপ, তাদের কোনো ধর্ম নেই।’

উল্লেখ্য, ব্রেনটন টারান্ট নামে অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ২৮ বছর বয়সী এক খ্রিস্টান জঙ্গির হামলায় শুক্রবার নিউজিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে জুমার নামাজ চলাকালে মুসল্লিদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। কাছাকাছি লিনউড মসজিদে দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো এই নরাধম। দুই মসজিদে হামলায় শহিদ হন ৪৯ জন মুসুল্লি। এর মধ্যে আল নুর মসজিদে ৪১ জন ও লিনউড মসজিদে সাতজন নিহত হন।

সূত্র: ডেইলি মেট্রো/বিবিসি

পূর্ববর্তি সংবাদতিনি ছিলেন নির্বিরোধ, শান্তিপ্রিয়, ধর্মপ্রাণ মানুষ
পরবর্তি সংবাদবাসে তুলে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে নরসিংদীতে মা-মেয়েকে ধর্ষণ