ভারতের হামলায় ৩০০ জন নিহত হলে তাদের লাশ কই : পাকিস্তান

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হামলার জেরে পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে বিমান হামলা চালিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির দাবি, ওই হামলায় পাকিস্তানভিত্তিক জইশ–ই–মুহাম্মদের বড় ঘাঁটি গুঁড়িয়ে গেছে। নিহত হয়েছে ৩০০ জন। কিন্তু ওই হামলায় এখন পর্যন্ত মাত্র একজনের আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বলে দাবি হামলাস্থলের বাসিন্দাদের।

আহত ওই ব্যক্তি গত মঙ্গলবার খুব ভোরে কীসের বিস্ফোরণের শব্দে জেগে উঠেছিলেন, তা নিশ্চিত জানা যায়নি। বিস্ফোরণে তাঁর মাটি–ইটের তৈরি ঘর কেঁপে ওঠে ও ডান চোখের ওপরে কেটে যায়।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিজয় গোখেল দাবি করেছেন, তাঁর দেশের ওই বিমান হামলায় পুলওয়ামা হামলার জন্য দায়ী জইশ–ই–মুহাম্মদ-এর বিপুলসংখ্যক লোক ও জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত হয়েছেন।

আরেক ভারতীয় কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছেন, ওই বিমান হামলায় প্রায় ৩০০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। তবে গত বৃহস্পতিবার ভারতের একজন জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এসব দাবি থেকে দৃশ্যত পিছু হটেন। বিমান হামলায় কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, জানতে চাইলে ভারতের এয়ার ভাইস মার্শাল আর জি কে কাপুর বলেন, ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলাটা অপরিপক্বের কাজ হবে।

ওই হামলাকবলিত এলাকাগুলোর একটি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বালাকোট শহরের কাছের জাবা গ্রাম। পাহাড়ি এই গ্রামে ৪০০ থেকে ৫০০ মানুষ বাস করে। গ্রামের ১৫ জনের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। তাঁরা নুরান শাহ ছাড়া আর কারও হতাহত হওয়ার খবর জানেন না। ৬২ বছরের বৃদ্ধ নুরান শাহর প্রশ্ন, তারা (ভারত) বলছে, তারা সন্ত্রাসীদের আক্রমণ করতে চেয়েছে। আপনি এখানে কোনো সন্ত্রাসীকে দেখছেন? এই যে আমরা এখানে আছি। আমরা কি সন্ত্রাসী?

আরেক বাসিন্দা বলেন, তিনি কোনো লাশ দেখেননি। জাবা হাসপাতালেও কোনো লাশ কিংবা আহত কেউ যায়নি বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

নিহতের সংখ্যা নিয়ে ইতিপূর্বে ভারতের দেওয়া পরিসংখ্যান উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটি বলেছে, ওই বিমান হামলা ব্যর্থ হয়েছে এবং ভারতীয় জঙ্গি বিমানগুলো বিস্তীর্ণ পাহাড়ি জনশূন্য জায়গায় বোমাবর্ষণ করেছে। তাতে কেউ হতাহত হয়নি।

বিমান হামলায় নিহত হওয়া ও ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া নিয়ে দুই পক্ষের দাবির এই অমিল ভারতের আগামী সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় বসার স্বপ্নে এক বাগড়া হয়ে দাঁড়াবে কি না, তা এখনই স্পষ্ট নয়। আগামী মে-র মধ্যে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

জাবা গ্রামের ঢালু প্রান্তরে গ্রামবাসী বোমার আঘাতে চারটি বড় গর্তের সন্ধান পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে স্প্লিন্টারবিদ্ধ কিছু পাইনগাছ দেখেছেন তাঁরা। ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা আবদুর রশিদ। তিনি বললেন, বিস্ফোরণে সবকিছু কাঁপছিল। কিন্তু আমি কোনো লাশ দেখিনি। স্থানীয় এক ব্যক্তি কিছুর আঘাতে আহত হয়েছেন। তবে কিছু পাইনগাছ মরেছে। একটা কাকও মরেছে। তাঁর কথার প্রতিধ্বনি করলেন বেশ কয়েকজন।

পূর্ববর্তি সংবাদআধুনিক মালয়েশিয়ায় ইসলামী রাজনীতির সঙ্গে পাস পার্টির পথচলা
পরবর্তি সংবাদবাহুবল উপজেলা ছাত্র জমিয়তের কাউন্সিল সম্পন্ন