কিংবদন্তি উস্তাদের সান্নিধ্যে আরেক কিংবদন্তি শাগরিদ

আবু তাশরীফ ।।

বাংলাদেশে ইসলামি সাহিত্য ও আরবি সাহিত্যের দুই কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব আল্লামা সুলতান যওক নদভী ও আল্লামা আবু তাহের মেসবাহ (আদিব হুজুর)। উস্তাদ সুলতান যওক নদভী আরবি সাহিত্যের জন্য দেশে-বিদেশে খ্যাতিমান। সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.-এর স্নেহধন্য ও বিশিষ্ট খলিফা। রাবেতায়ে আদবে আলমে ইসলামীর বাংলাদেশ ব্যুরো প্রধান। চট্টগ্রাম জামিয়া দারুল মাআরিফ তাঁর হাতে গড়া ইলমের বাগান।

পটিয়া মাদরাসায় অধ্যাপনাকালে এই উস্তাদ নদভীর বিশেষ ছাত্রত্ব লাভ করেন আল্লামা আবু তাহের মেসবাহ –আদিব হুজুর। তখন উস্তাদ যৌবনছোঁয়া প্রখর মেধাবী শিক্ষক। আর ছাত্রটি সদ্য কৈশোর পেরুনো ইলম অন্বেষী সবুজ যুবক। সেই সবুজ যুবক আজ আরবি ও বাংলা সাহিত্যে আরেক কিংবদন্তিতে পরিণত। বিশেষত তাঁর হৃদয়গ্রাহী বিষয় ও গদ্যধারার প্রতি মুগ্ধতা এ দেশের ইসলামপ্রিয় লাখো পাঠকের। তিনি মাদরাসাতুল মাদীনা ও মাদানী নেসাবের জনক। তাঁরা আজ দুজনই বার্ধক্যের চাদর গায়ে ক্লান্ত।

শায়খ সুলতান যওক নদভী উস্তাদ, শায়খ আবু তাহের মেসবাহ তাঁর শিষ্য। দু’জনই আজ এক সঙ্গে এক মজলিসে। উস্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে, উস্তাদের সঙ্গ ও সান্নিধ্য নিতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দারুল মাআরিফে ছুটে গেছেন আদিব হুজুর। সঙ্গে তাঁর পুত্র মাওলানা মুহাম্মদ। একজন পার্থিব জীবনের ৮০ পেরিয়েছেন। আরেকজন ষাট পার করেছেন আরও আগে। ইলম, সাধনা ও কাজের ভারে ন্যূব্জ এই দুই প্রাজ্ঞজনই এখন নানা শারীরিক ব্যাধিতেও অবসন্ন । তারপরও উস্তাদের কাছে ছুটে যাওয়া নিভৃতচারী এই কাজপাগল শিষ্যের খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

আদীব হুজুরের পাশে ছেলে মাওলানা মুহাম্মাদ

এর আগে খবর পাওয়া গেছে, উস্তাদ নদভী তার এই ‘ঘরকুনো’ স্বর্ণপ্রসূ শিষ্যকে ফোন দিয়েছিলেন। সেই ফোনে ছিল ব্যাকুল ডাকের সুর। হাজার হাজার আলেমের ‘আদিব হুজুর’ মায়ের ডাকে শিশু সন্তানের ছুটে যাওয়ার মতোই ছুটে গেছেন উস্তাদের কোলে, তাঁর সান্নিধ্যে। কাজ, ক্লান্তি, অসুস্থতা, অনভ্যাসের সব বাধ ভেঙ্গেই এখন তিনি তার উস্তাদের পাশে বসে আছেন। জুমাবার (১ মার্চ) বাদ আসর চট্টগ্রামের দারুল মাআরিফে ছাত্রদের উদ্দেশে তাঁর নসীহত পেশ করার কথা রয়েছে।

আরবি ও বাংলা সাহিত্যের এই দুই বরেণ্য ব্যক্তিত্বের, ইসলামি উলুমের এই দুই কিংবদন্তির ফ্রেমটি বহুদিন চলমান, প্রাণবান ও সজীব থাকুক- তাদের লাখো শাগরিদ, ভক্ত, অনুরক্তের এই দোয়া আল্লাহ তাআলা কবুল করুন। আমিন।

ছবি সংগ্রহ: মাহমুদ মুজিব

পূর্ববর্তি সংবাদপাকিস্তানে হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা ভারতীয় বাহিনী প্রধানদের
পরবর্তি সংবাদ৫ কারণে ভোটার কম হওয়ার কথা বললেন ওবায়দুল কাদের