অনুমোদিত নয় এমন কাজ স্বপ্ন-ইস্তেখারার মাধ্যমে বৈধতা পায় না : মুফতি নুরুল আমিন

ইসলামে শরীয়তে স্বপ্ন কিংবা ইস্তেখারার অবস্থান কী এবং কী এসবের গুরুত্ব ও ফলাফল, এ নিয়ে সমাজে নানারকম আলোচনা ও বিভ্রান্তির চর্চা দেখা যায় প্রায়ই। এসব বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ধারণা পেতে ইসলাম টাইমস কথা বলেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের একজন বিশিষ্ট আলেম ও শায়খুল হাদিস মুফতি নুরুল আমিনে সঙ্গেমুফতি নুরুল আমিন শাহ হাকিম আখতার রহ.-এর অন্যতম খলিফাদরস-তাদরিসের পাশাপাশি মানুষের ইসলাহের জন্য অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন এই আলেম। কথোপকথনে তার সঙ্গে ছিলেন আতাউর রহমান খসরু


ইসলাম টাইমস : শরিয়তের দৃষ্টিতে আমলের স্বপ্ন ও ইস্তেখারার গুরুত্ব কতোটুকু?

মুফতি নুরুল আমিন : স্বপ্ন ও ইস্তেখারা সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত জীবনেই সীমাবদ্ধ। নিজের জন্য প্রযোজ্য, অন্যের জন্য প্রযোজ্য নয়। নবী আ.-দের স্বপ্ন ওহি ছিলো এবং তারা স্বপ্নযোগে যে নির্দেশনা পেয়েছিলেন মান্য করা আবশ্যক।

ইসলাম টাইমস : সাধারণ মানুষ ও নবীদের স্বপ্নের মধ্যে এই পার্থক্য কেন?

মুফতি নুরুল আমিন : কারণ, নবীরা মা’সুম (নিষ্পাপ) ও মাহফুজ (আল্লাহ কর্তৃক নিরাপত্তাপ্রাপ্ত) ছিলেন। মানবিক দুর্বলতা বা শয়তান তাদের স্পর্শ করতে পারতো না। কিন্তু সাধারণ মানুষ মানবিক দুর্বলতা ও শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। তাই তাদের স্বপ্ন বিনাশর্তে আমলযোগ্য নয়।

ইসলাম টাইমস : স্বপ্ন ও ইস্তেখারার উপর আমলের শর্ত কী?

মুফতি নুরুল আমিন : স্বপ্ন ও ইস্তেখারা দলিল হয় না (প্রামাণ্য হিসেবে গণ্য হয় না), তায়িদ হয় (অন্যকে শক্তিশালী করে)। অর্থাৎ স্বপ্ন ও ইস্তেখারার মাধ্যমে শরিয়তে বৈধ দুটি কাজের মধ্যে থেকে একটি কাজ বেছে নেওয়া যাবে। কিন্তু অনুমোদিত নয় এমন কোনো কাজ স্বপ্ন-ইস্তেখারার মাধ্যমে বৈধতা পায় না। এমনকি একটি মুস্তাহাবের বিরোধী হলেও এমন স্বপ্ন-ইস্তেখারা পরিহার করা উত্তম। যদি না ভিন্ন কোনো কারণ বা দলিল পাওয়া যায়।

ইসলাম টাইমস : যদি কারো স্বপ্ন বা ইস্তেখারার শরয়ি দলিলের বিরোধী হয়?

মুফতি নুরুল আমিন : উম্মতের স্বপ্ন ও ইস্তেখারা ইঙ্গিতবাচক। এটা স্পষ্ট কিছু না। সুতরাং যে ব্যাখ্যা গ্রহণ করলে শরয়ি দলিল বিরোধী হয়, তা প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং ভিন্ন ব্যাখ্যা খুঁজতে হবে।

ইসলাম টাইমস : মানুষ নিজের স্বপ্নের ব্যাখ্যা নিজে করবে নাকি অন্য কারো সহযোগিতা নেবে?

মুফতি নুরুল আমিন : স্বপ্নের ব্যাখ্যা মানুষ নিজে নিজে খুঁজবে না। বরং এ ক্ষেত্রে তারা মুত্তাকি ও জ্ঞানী ব্যক্তির সহযোগিতা নেবে।

ইসলাম টাইমস : কেউ যদি ইস্তেখারা ও স্বপ্নের অজুহাতে শরয়ি দলিল ও উলামায়ে কেরামের অবস্থানের বিরুদ্ধে চলে যায়। তাহলে তার ব্যাপারে মানুষ কী করবে?

মুফতি নুরুল আমিন : যেহেতু স্বপ্ন ও ইস্তেখারা অন্যের জন্য প্রযোজ্য নয়, তাই তাকে গুরুত্ব দেবে না। চুপ থাকবে। যতোক্ষণ না তার অবস্থানের কারণে ইসলাম ও মুসলমানের ক্ষতি না হয়। যখন ইসলাম ও মুসলমানের ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়, তখন তার পেছনে না পড়ে শরিয়তের বক্তব্য তুলে ধরবে। যেন মানুষ নিজ থেকেই তার ভুল বুঝতে পারে এবং দোষচর্চা থেকেও বেঁচে যায়।

পূর্ববর্তি সংবাদইন্দোনেশিয়ায় চলছে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ইসলামি বইমেলা
পরবর্তি সংবাদদারুল দেওবন্দের মোহতামিম হাসপাতালে ভর্তি, সকলের কাছে দোয়া কামনা