শাহ মুহাম্মদ খালিদ ।। টঙ্গী ময়দান থেকে
বুধবার দিবাগত রাত পার হওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার সকালেও ময়দান অভিমুখে অব্যাহত আছে মানুষের ঢল। ইতোমধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে পুরো ময়দান। প্রতক্ষ্যদর্শীরা বলছেন, আগে যে ভিড় তারা মুনাজাতের দিন দেখতেন সে ভিড় এবার প্রথম দিনেই শুরু হয়েছে। এই জনস্রোত অব্যাহত থাকলে আগামীকাল ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণকালের বৃহত্তম জুমার নামাজ।
শনিবার বিকাল নাগাদ যখন আখেরি মুনাজাত হবে ততক্ষণে মানুষের ভিড় ময়দান ছাড়িয়ে পশ্চিমে তুরাগ পার হয়ে রানাভোলা, দক্ষিণে আব্দুল্লাহপুর, পূর্বে স্টেশন রোড এবং উত্তরে কামারপাড়া রাস্তা অতিক্রম করে যাবে। এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সকালে ময়দানে মূল খিত্তার বাইরে এমনকি পার্শ্ববর্তী রাস্তা ও তুরাগ নদীর অপর পাশেও অস্থায়ী শামিয়ানা খাটিয়ে মানুষকে অবস্থান নিতে দেখা যায়। ময়দানের বাইরের এবং ভেতরকার রাস্তাগুলোতে খুব ধীর গতিতে চলতে হচ্ছে। সামান্য পথ অতিক্রম করতে যথেষ্ট সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। মোটকথা এমন ভিড় ও চাপ তৈরি হয়েছে যা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত বিগত বছরগুলোর ইজতেমায় দেখা যায়নি। নাটোর থেকে আগত আব্দুর রহিম মিয়া (৩২) জানালেন, পাঁচ ঘণ্টার রাস্তা তারা অতিক্রম করে এসেছেন বারো ঘণ্টায়।
বিগত বছরগুলোতে কখনোই তিনি প্রথম দিনে এই পরিমাণ লোক দেখেননি। এমন জনসমুদ্র কিভাবে তৈরি হলো তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবার সারাদেশ এক পর্বেই হচ্ছে। এরচেয়ে বড় কারণ এবারের প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন। আলমী শুরার তত্ত্বাবধানেই দেশের সিংহভাগ মানুষ তাবলীগের কাজ করছেন। তারা আলমী শুরার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই ইজতেমায় অংশগ্রহণকে বিশেষ দায়িত্ব ও কর্তব্য মনে করছেন। ফলে ছোটোখাটো বিভিন্ন কাজের কারণে যারা ইজতেমায় আসতেন না তারাও সব কাজ ফেলে ইজতেমায় চলে আসাকে সবচেয়ে বড় কাজ মনে করছেন।
গতকাল রাতে মোমেনশাহীর খিত্তায় গিয়ে দেখা যায় কিশোরগঞ্জের আশি জনের একটি বিশাল জামাত মোমেনশাহীর খিত্তায় এসে অবস্থান করছে। কারণ জানতে চাইলে তারা জানান, কিশোরগঞ্জের জন্য নির্ধারিত জায়গা বিকালের মধ্যেই পূর্ণ হয়ে গেছে। সেখানে জায়গা না থাকায় তারা মোমেনশাহী এলাকায় চলে এসেছেন। সংশ্লিষ্ট খিত্তার দায়িত্বশীলগণ তাদেরকে অন্য কোথাও যাওয়ার পরামর্শ দিলেও ততক্ষণ পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করছিলেন।
বাদ ফজর বয়ানের মিম্বর থেকে সংক্ষিপ্ত আলোচনার পরে এখন সকালের নাস্তা ও গোসলের বিরতি চলছে। সাড়ে নয়টা বা দশটা থেকে তালীম, মুজাকারা, এবং মশওয়ারার আমল শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।