ত্যাগের মাধ্যমে দ্বীন কায়েম হয় : মাওলানা আহমদ লাট

শাহ মুহাম্মদ খালিদ ।।  টঙ্গী থেকে

আমরা তাবলিগের যে কাজ করছি সেটা দ্বীনের অংশ। এটা নবীওয়ালা কাজ। যে কাজে যে দক্ষ, তার কাছ থেকে সে কাজ শেখা বুদ্ধিমানের কাজ। ডাক্তারের কাছে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং জেলের কাছ থেকে কামারের কাজ শেখা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সুতরাং নবীওয়ালা কাজ শিখতে হবে নবীর ওয়ারিসদের কাছ থেকেই। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন ওলামায়ে কেরাম হলেন তাঁর ওয়ারিস। সুতরাং ওলামায়ে কেরাম যেভাবে বলবেন সেভাবেই দ্বীনের এই কাজ করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব আম বয়ানে এসব কথা বলেন তাবলিগের বর্ষীয়ান মুরুব্বি মাওলানা আহমদ লাট সাহেব।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সব সময় চেষ্টা করা উচিৎ ভালো কিছু করার জন্য। কারণ যাদের মাধ্যমে ভালো কিছু অস্তিত্ব লাভ করে নবীজি সা. তাদের জন্য কল্যাণের দোয়া করে গেছেন। বিপরীতে কারো মাধ্যমে যদি কোন অন্যায়, অনাচার বা অনিষ্ট অস্তিত্ব লাভ করে তাহলে সে নবীজির বদদোয়ার শিকার হবে।

মাওলানা আহমদ লাট বলেন, দ্বীন হলো ত্যাগ স্বীকারের নাম। সাহাবায়ে কেরাম ত্যাগ স্বীকার করেছেন ফলে এই দ্বীন মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে গেছে। মুহাজিররা নিজেদের বাড়িঘর ত্যাগ করেছেন, আনসাররা তাদের মেহমানদারি করতে করতে এক পর্যায়ে রান্নাই বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্বনবীর দৌহিত্রদ্বয় খাবার না পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। যেই দ্বীনের জন্য তাঁরা এতো ত্যাগ স্বীকার করেছেন সেই দিনের জন্য যদি আমরা মাসে তিনটা দিন, বছরে চল্লিশটা দিন বের করতে না পারি তাহলে এর চেয়ে বদ কিসমত আর কিছু হতে পারে না।

তিনি অত্যন্ত জযবার সাথে বলেন, ত্যাগ শিকারের নাম হল দ্বীন। ত্যাগের মাধ্যমেই দ্বীন কায়েম হয়। টাকা পয়সা, বিলাসিতা এবং শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে কখনও দ্বীন কায়েম হয় না।

যে নিজের ভুল স্বীকার করে আল্লাহ তাকে আরো বড় বানিয়ে দেন। ভুল স্বীকার এর মধ্যে মান সম্মান কমে যাওয়ার ভয় নেই। হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু খলিফা থাকা অবস্থায় এক মহিলার ব্যাপারে পাথর নিক্ষেপে হত্যার ফয়সালা দিয়েছিলেন। কিন্তু হজরত মুয়াজ রা. প্রতিবাদ করেন এবং এটাকে ভুল হিসেবে প্রমাণ করেন। তখন হযরত ওমর রা. নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং সেই মহিলাকে হত্যার ফয়সালা বাতিল করে দেন।

এতে হযরত ওমরের কী সম্মান কমে গিয়েছে? আমরা কি এখন তাকে সম্মান দেই না? আমরা তো আজও হজরত ওমরকে কত ভক্তি ও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। তাঁর কথা ও কাজকে অনুসরণীয় মনে করি। সুতরাং কারো যদি ভুল হয়ে থাকে, তাহলে কোন কিছুর পরোয়া না করে তার উচিত নিজের ভুল স্বীকার করে নেয়া। এতেই পুরো উম্মাহর কল্যাণ নিহিত।

বয়ানের ভাষান্তর করেন কাকরাইলের মুরুব্বি মাওলানা ওমর ফারুক। বয়ানের শেষে আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার জন্য পুরো ময়দানে তাশকিল (উদ্বুদ্ধকরণ ও নাম লেখা) করা হয়।

পূর্ববর্তি সংবাদঠাকুরগাঁয়ে বিজিবিদের বয়কট করেছে এলাকাবাসী
পরবর্তি সংবাদগাজীপুরে পেপার কারখানায় আগুন