তাবলিগের সাথীদের আগমনে পূর্ণ হয়ে উঠছে ইজতেমার ময়দান

শাহ মুহাম্মাদ খালিদ ।। টঙ্গী ময়দান থেকে

ধীরে ধীরে পূর্ণ হয়ে উঠছে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান। বুধবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথে টঙ্গী অভিমুখে আসতে থাকেন দাওয়াত ও তাবলীগের সাথীরা। বিকালের দিকে ময়দানের প্রধান অংশ পূর্ণ হয়ে উঠতে থাকে। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনো ময়দান অভিমুখে এয়ারপোর্ট রোড, আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া রোড এবং ময়মনসিংহ রোডে মানুষের ঢল অব্যাহত আছে।

ওলামা কেরাম এবং আলমী শুরার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ ইজতেমায় সাধারণ তাবলীগের সাথীরা তেমনভাবে জুড়বে না এমন প্রচারণা সাদপন্থীরা চালালেও ময়দানে প্রবেশ করে বিপুলসংখ্যক সাধারণ তাবলিগি সাথীদেরকে আমলে মশগুল দেখা যায়। মাদ্রাসার ছাত্র এবং শিক্ষকদের তুলনায় ময়দানে সাধারণ আম তাবলীগী সাথী অনেক বেশি পরিমাণে উপস্থিত রয়েছেন। আসরের পর খিত্তার পয়েন্টগুলোতে প্রবেশ করে প্রায় প্রতিটি জামাতকেই নিজেদের আমির সাহেবের তত্ত্বাবধানে মশওয়ারা করতে দেখা যায়।

ভোলার খিত্তার জিম্মাদার হাজী তৈয়ব সাহেব জানালেন, ভোলার তাবলীগের সিংহভাগ সাথী আজ সকালের লঞ্চেই চলে এসেছেন। বরিশাল, ভোলাসহ নৌপ্রধান অঞ্চলের লোকেরা লঞ্চে যাতায়াত করেন। আর লঞ্চ ছাড়ে সন্ধ্যায়। ফলে আজ সন্ধ্যা থেকেই আমলে শরীক হওয়ার জন্য এসব এলাকার সাথীরা গতকাল সন্ধ্যায় লঞ্চে উঠে আজ সকালেই ময়দানে চলে এসেছেন। অবশিষ্ট অংশ আজ লঞ্চে উঠে কাল সকালে ময়দানে এসে জুড়বেন বলে তিনি জানান।

বিদেশিদের কামরার ওখানে গিয়ে দেখা যায়, মেহমানগণ সামানাপত্র বিছিয়ে ইজতেমার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন। ভারত এবং পাকিস্তানের মেহমানদের জন্য নির্ধারিত জায়গা ততক্ষণে ভরপুর হয়ে উঠেছে। ভারতের গুজরাটের একটি জামাতের সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তাদের আরো কয়েকটি জামায়াত বাংলাদেশ অভিমুখে পথে রয়েছে বলে তারা জানান। তারা বলেন এখানে আসার আগে ইজতেমা সম্পর্কে বিভিন্ন অপপ্রচার শুনলেও ময়দানে এসে সার্বিক পরিস্থিতি দেখে তারা স্বস্তি বোধ করছেন। নানা প্রতিকূলতার পরেও এই ইজতেমা বিশ্ব মুসলিমের হেদায়াতের মাধ্যম হয়ে উঠবে বলে তারা আশা করছেন।

আসরের পরে বয়ানের মিম্বরে আলোচনা করেন কাকরাইলের মুরুব্বি এবং মালওয়ালি মাদরাসার উসতাদ মাওলানা ফারুক সাহেব। আলোচনায় তিনি বাইরের সব ধরনের চিন্তা ভাবনা ও ব্যস্ততা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করে সাথীদেরকে আমলে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। শুক্রবার রাতের মধ্যেই সাথীদেরকে তাশকিলের কাজ পুরোপুরি শেষ করে ফেলার তিনি জোর তাগিদ দেন।

প্রসঙ্গত উলামায়ে কেরাম এবং আলমি শুরার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ইজতেমার মূল পর্ব শুরু হবে আগামীকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি বাদ ফজর আম বয়ানের মাধ্যমে। এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি রোজ শনিবার বিকেলে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ইজতেমা সমাপ্ত হবে।

পূর্ববর্তি সংবাদকাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে রাজধানীতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ
পরবর্তি সংবাদঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের তালিকা করতে আদালতের নির্দেশ