বান্দার হক থেকে তাওবা করার উপায়

হযরত মাওলানা মুফতি তাকী উসমানী ।।

আলহামদু লিল্লাহি নাহমাদুহূ ওয়া নাস্তাঈনুহূ ওয়া নাস্তাগফিরুহ ওয়াছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া ‘আলা আলিহী ওয়া আছহাবিহী ওয়া বারাকা ও সাল্লামা তাসলীমান কাছীরা, আম্মা বা‘দ। এক মালফূযে হাকীমুল উম্মত হযরত থানবী (রাহ) বলেন, ‘নেক আমল অথবা তাওবা দ্বারা গোনাহ মাফ হয়ে যায়, তবে কারো হক মাফ হয় না। সুতরাং যথাসম্ভব বান্দার হক আদায় করতে হবে এবং সমস্ত হক আদায় করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা রাখতে হবে। তারপর যদি কিছু বাকি থেকে যায় এবং মৃত্যু এসে যায়, তখন আল্লাহ তা‘আলার কাছে আশা করা যায় যে, তিনি তাকে দায়মুক্ত করে দেবেন, অর্থাৎ মাযলূমকে খুশী করে জালিমের মাগফিরাত করে দেবেন।’ (আনফাসে ঈসা, ১৯৮)

ছাগীরা ও কবীরা গোনাহ কীভাবে মাফ হয়? এখানে হযরত (রহ) নেক আমল দ্বারা এবং তাওবা দ্বারা গোনাহ মাফ হওয়ার কথা বলেছেন; তবে পার্থক্য এই যে, নেক আমল দ্বারা শুধু ছগীরা গোনাহ মাফ হয়, আর তাওবা দ্বারা কবীরা গোনাহও মাফ হয়। হাদীছ শরীফে যে নেক আমল দ্বারা গোনাহ মাফ হওয়ার খোশখবর এসেছে তা দ্বারা শুধু ছাগীরা গোনাহ উদ্দেশ্য। যেমন বর্ণিত আছে, অযু করার সময় বান্দা যখন হাত ধোয় তখন হাতের গোনাহগুলো মাফ হয়ে যায়, যখন চেহারা ধোয় তখন চোখের গোনাহগুলো মাফ হয়ে যায়, যখন পা ধোয় তখন পা দ্বারা হেঁটে যে সমস্ত গোনাহের দিকে গিয়েছে তা মাফ হয়ে যায়। এভাবে নেক আমলের ওছিলায় আল্লাহ তা‘আলা বান্দার ছগীরা গোনাহগুলো (তাওবা ছাড়া) নিজে থেকেই মাফ করে দেন।

হাদীছ শরীফে আরো আছে, বান্দা যখন নামাযের জন্য মসজিদে যায় তখন প্রত্যেক কদমে আল্লাহ তা‘আলা তার গোনাহ মাফ করতে থাকেন। আবার নামায দ্বারাও গোনাহ মাফ হতে থাকে। যেমন এক ছাহাবী আরয করলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমার দ্বারা তো বড় শক্ত গোনাহ হয়ে গেছে!’ তারপর তিনি একটি ছগীরা গোনাহর কথা বললেন। আসলে ছাহাবা কেরামের এটাই ছিলো শান যে, সামান্য ত্রুটিকেই তারা ভাবতেন বিরাট গোনাহ। তো নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, এই গোনাহের পরে তুমি তো আমার সঙ্গে নামায পড়েছো, সুতরাং এই নামায দ্বারা তোমার গোনাহ মাফ হয়ে গেছে। তারপর তিনি তিলাওয়াত করলেন- ان الحسـنت يذهبن السيـآت অবশ্যই নেকিসমূহ গোনাহসমূহকে মুছে ফেলে। বান্দার প্রতি দয়া ও রহমতের কী আশ্চর্য নেযাম আল্লাহ তা‘আলা জারি করেছেন যে, বান্দা নেক আমল করতে থাকবে, আর তার গোনাহ মাফ হতে থাকবে! তবে এটা হলো ছগীরা গোনাহের কথা; কবীরা গোনাহ তাওবা ছাড়া মাফ হয় না, তাই সেক্ষেত্রে তাওবা করা জরুরি। অবশ্য আল্লাহ যদি আরো দয়া করেন তাহলে তাওবা ছাড়াও কারো কবীরা গোনাহ মাফ করে দিতে পারেন। তিনি যদি রহম করেন, আর মাফ করেন তাহলে তাঁকে বাধা দেয়ার কে আছে? তবে উছূল ও বিধান এই যে, কবীরা গোনাহ তাওবা ছাড়া মাফ হয় না। কবীরা গোনাহ হয়ে গেলে অবশ্যই তাওবা করতে হবে। বান্দার হক তাওবা দ্বারা মাফ হয় না।

আলোচ্য মালফূযে হযরত থানবী (রহ) তারপর বলেন, ‘তবে হকসমূহ মাফ হয় না।’ এখানে হক দ্বারা উদ্দেশ্য হলো বান্দার সমস্ত হক এবং আল্লাহ তা‘আলার ঐসমস্ত হক যা আদায় করা সম্ভব। যেমন নামায ছুটে গেছে, আর সে সুস্থ আছে, নামাযের কাযা করতে পারে, সুতরাং তার নামায শুধু তাওবা দ্বারা মাফ হবে না, বরং তা কাযা করতে হবে। রোযা ও হজ্জ-যাকাত সম্পর্কেও একই কথা। তো তাওবা দ্বারা কবীরা গোনাহ মাফ হয়ে যায়, এটা সত্য, তবে শুধু তাওবা দ্বারা বান্দার কোন হক মাফ হবে না, যতক্ষণ না তা আদায় করা হবে, কিংবা হকদার নিজে তা মাফ করে দেবে। সুতরাং পিছনে বান্দার যত হক পাওনা হয়েছে সেগুলো এবং আল্লাহর যে সমস্ত হক আদায় করা সম্ভব সেগুলো আদায় করা শুরু করতে হবে।

এ দুই প্রকার হকের ক্ষেত্রে তাওবায় কোন কাজ হবে না। শুধু তাওবা দ্বারা এ দুই প্রকার হক মাফ হবে না, বরং পিছনের সমস্ত হক আদায় করা শুরু করতে হবে। আমাদের হযরত বলতেন, ‘কেউ যদি শুধু তাওবা করেই ভাবে যে, দায়মুক্ত হয়ে গেছে, আর কিছু করার প্রয়োজন নেই তাহলে এটা হবে শয়তানের ধোকা। বরং তাওবা করার পর চিন্তা করে করে বের করতে হবে যে, আমার উপর কী কী হক ওয়াজিব ছিলো, হোক সেটা বান্দার হক, কিংবা আল্লাহর হক। তারপর সেগুলো আদায় করা শুরু করতে হবে, যার তরীকা আমি তাওবার বয়ানের শুরুতে আরয করেছি। সেটা এই যে, একটি খাতায় তালিকা তৈরী করো যে, আমার যিম্মায় অমুক অমুক হক রয়েছে, এই পরিমাণ নামায বা রোযা রয়েছে, যাকাত রয়েছে, অমুকের অমুকের এই এই করয ও পাওনা রয়েছে। আজ থেকে আমি এগুলো আদায় করা শুরু করছি। যদি সমস্ত হক আদায় করার আগে আমার মৃত্যু এসে যায় তাহলে আমার সম্পত্তি থেকে ঐ সকল ইবাদতের ফিদয়া এবং ঐ সকল করয যেন আদায় করে দেয়া হয়। তারপর লিখতে থাকো, কখন কী পরিমাণ আদায় হলো, আর কী পরিমাণ বাকি থাকলো।

হক আদায়ের এই চেষ্টায় মশগুল থাকা অবস্থায় যদি মৃত্যু এসে যায় তাহলে তার সম্পর্কে হযরত থানবী (রহ) বলছেন, আল্লাহর রহমতের কাছে আশা করা যায় যে, বাকি হক মাফ করে দেয়া হবে। মাফ করার তরীকা এই হবে যে, কেয়ামতের দিন তিনি হকদারদের বলবেন, দেখো, আমার এই বান্দা তোমাদের হক আদায় করা শুরু করেছিলো এবং যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছিলো, কিন্তু তার যিন্দেগি খতম হয়ে যাওয়ায় হক আদায়ের কাজ সে পুরা করতে পারেনি। এখন আমি তোমাদেরকে বড় বড় নেয়ামত দিচ্ছি, তোমরা খুশী হয়ে তার হক মাফ করে দাও। সুবহানাল্লাহ! কত বড় দয়ালু আমাদের আল্লাহ! আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না এক ওয়াযে হযরত (রহ) বলেছেন, মানুষ মনে করে যে, যতক্ষণ বান্দার হক আদায় না করা হবে, কিংবা হকদার নিজে মাফ না করবে, বান্দার হক থেকে মাফ পাওয়ার কোন উপায় নেই। ফলে অনেক সময় মানুষ নিরাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেয় যে, আমার যিম্মায় তো এত শত মানুষের কত শত হক! যদি এখন থেকে আদায় করা শুরুও করি, সারা জীবনেও তো শেষ করতে পারবো না। এই হতাশার কারণে সামান্য যা কিছু হক আদায় করা সম্ভব ছিলো তা থেকেও সে হাত গুটিয়ে নেয়।

কিন্তু আসল কথা এই যে, হতাশ ও নিরাশ হওয়ার কোন কারণ নেই। এমন বান্দার জন্যও আল্লাহ তা‘আলা রাস্তা খোলা রেখেছেন। কেননা হক আদায় শুরু করার পর এবং যথাসাধ্য চেষ্টা করার পরও যদি হক থেকে যায়, আর মৃত্যু এসে যায় তাহলে আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং তার যিম্মা গ্রহণ করবেন এবং হকদারদেরকে খুশী করে দেবেন যেন তারা তাদের হক মাফ করে দেয়।

শত মানুষের ঘাতক ও তার তাওবা

এ প্রসঙ্গে হযরত থানবী (রহ) হাদীছ শরীফের সেই প্রসিদ্ধ ঘটনাটি বয়ান করেছেন। হযরত ঈসা (আ)-এর উম্মতে ছিলো এক ভয়ঙ্কর খুনী। সে একে একে নিরানব্বই জন মানুষ খুন করেছিলো। তারপর হঠাৎ একদিন তার দিলে আল্লাহর ভয় পয়দা হলো। সে পেরেশান হয়ে ভাবলো, হায়, আমার কী উপায় হবে! যেখানে একজন মানুষকে হত্যা করার অর্থ হলো গোটা মানবজাতিকে হত্য করা সেখানে আমি তো নিরানব্বই জন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছি! (মানুষ হত্যা করার যে সাজা কোরআনে কারীমে বয়ান করা হয়েছে অন্য কোন গোনাহ সম্পর্কে তা বয়ান করা হয়নি। ইরশাদ হয়েছে- ومـن يقتـل مؤمنـا متعمـدا فجـزاءه جهنم خـالـدا فيهاط وغضب اللـه عليـه ولعـنه واعـد لـه عذابا عظيـما যে ব্যক্তি কোন মুমিনকে ইচ্ছাকৃত হত্যা করে তার সাজা হবে চিরস্থায়ী জাহান্নাম। তার উপর হবে আল্লাহর গযব এবং আল্লাহর লা‘নত। আর তার জন্য তিনি ভীষণ আযাব তৈয়ার করে রেখেছেন।) যাই হোক, আল্লাহর ভয়ে ভীত ঐ ব্যক্তি ঈসাঈদের এক পাদ্রীর কাছে গিয়ে বললো, আমি তো নিরানব্বই জন মানুষকে হত্যা করেছি। তো আমার তাওবার কি কোন উপায় আছে? পাদ্রী বললো, তোর নাজাতের কোন রাস্তা নেই, তুই তো সোজা জাহান্নামী। লোকটি তখন ক্রোধে আত্মহারা হয়ে বললো, বাঁচার উপায় নেই, তো তোমাকে বাঁচিয়ে রেখে লাভ কী, আসো তোমাকে দিয়ে একশ পুরা করি। এই বলে লোকটি ঐ পাদ্রীকে হত্যা করে ফেললো।

তারপর সে এক ঈসাঈ সাধুর কাছে গিয়ে বললো, আমি একশ মানুষের হত্যাকারী, আমার নাজাতের কি কোন উপায় আছে? তিনি বললেন, তুমি তাওবা করে আল্লাহর কাছে মাফ চাও, আর এককাজ করো। অমুক বস্তির লোকেরা নেককার, তুমি গিয়ে তাদের সঙ্গে বসবাস করো। সাধুর উদ্দেশ্য ছিলো যে, তাদের ছোহবতে সেও নেককার হয়ে যাবে এবং যে গোনাহ করেছে তার ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করবে। লোকটি নেককারদের বস্তির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো, কিন্তু পথেই তার মৃত্যু হলো। তখন রহমতের ফিরেশতা এবং আযাবের ফিরেশতাদের মধ্যে বিরোধ হলো। আযাবের ফিরেশতা বললেন, এ তো শত লোকের ঘাতক, সুতরাং সে আমাদের ভাগে, আমরা তাকে জাহান্নামে নিয়ে যাবো। আর রহমতের ফিরেশতা বললেন, সে তো তাওবা করে নেককার হওয়ার জন্য চলেছিলো। সুতরাং সে আমাদের, আমরা তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবো। আল্লাহ তা‘আলা তখন ফায়ছালা করলেন যে, লোকটির মউতের স্থান থেকে উভয় দিকের দূরত্ব পরিমাপ করো, তারপর দেখো, মৃত্যুর সময় সে কোন স্থানের বেশী নিকটে ছিলো। পরিমাপ করে দেখা গেলো, সে নেককারদের বস্তির একগজ বেশী কাছে ছিলো। তখন আল্লাহ তা‘আলা আদেশ করলেন, তাকে রহমতের ফিরেশতাদের হাওয়ালা করা হোক।

এই ঘটনার শিক্ষা হাকীমুল উম্মত হযরত থানবী (রহ) হাদীছে বর্ণিত এই ঘটনা থেকে প্রমাণ আহরণ করে বলেন, লোকটির অপরাধ ছিলো হুকূকুল ইবাদের সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু সে যেহেতু হুকূকুল ইবাদ আদায় করার নিয়ত ও প্রতিজ্ঞা করে রওয়ানা হয়েছিলো সেহেতু তার তাওবা কবুল করে আল্লাহ তা‘আলা তাকে মাফ করে দিয়েছেন। আর যাদের সে হত্যা করেছিলো, যারা তার যুলুমের শিকার হয়েছিলো, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা তাদের দরজা বুলন্দ করে তাদেরকে খুশী করে দেবেন। পরিমাপের কী প্রয়োজন ছিলো? এ প্রশ্নের উত্তর এখানে প্রশ্ন জাগে যে, আল্লাহ তা‘আলা তো লোকটিকে মাফ করে দেয়ার ফায়ছালা করেই রেখেছিলেন, তাহলে আর পরিমাপ করানোর কী প্রয়োজন ছিলো? আচ্ছা ধরুন, এক দু’গজ আগেও যদি তার মৃত্যু হতো তাহলে কী হতো? সে তো তওবা করেছিলো এবং চেষ্টা শুরু করে দিয়েছিলো, তাহলে ফায়ছালা করার জন্য ‘দূর-নিকটের’ এই পরিমাপের কী প্রয়োজন ছিলো?

অনেক দিন থেকে আমার মনে এই খটকা ছিলো এবং আমি এর জবাব তালাশ করছিলাম। পরে আল্লাহ তা‘আলা আমার দিলে এই জবাব ঢেলে দিলেন যে, আল্লাহ তা‘আলার পরিমাপ করানোর উদ্দেশ্য এটা ছিলো না যে, পরিমাপের ফলাফলের ভিত্তিতে তিনি ফায়ছালা করবেন। মাফ ও মাগফিরাতের এবং দয়া ও রহমতের ফায়ছালা তো আগেই হয়ে গিয়েছিলো, কিন্তু পরিমাপের উদ্দেশ্য ছিলো বান্দাদের একথা বোঝানো যে, মাফ ও মাগফিরাতের মু‘আমালা তখনই হয় যখন বান্দা নিজের ইছলাহ ও সংশোধনের পথে চলা ও মেহনত করা শুরু করে দেয় এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পথ অতিক্রম করে। এমন নয় যে, তাওবার নামে একটা কিছু করলো, এরপর সব ভুলে অলসতায় ডুবে থাকলো, আর মাগফিরাত পেয়ে গেলো! এমন ব্যক্তির সঙ্গে মাফ ও মাগফিরাতের মু‘আমালা কীভাবে হতে পারে? এ ঘটনার মাধ্যমে এটাই প্রমাণ করা হয়েছে যে, ইছলাহ ও সংশোধনের শুধু নিয়ত করা যথেষ্ট নয়, বরং নিয়ত করার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই ইনশাআল্লাহ রহমত ও মাগফিরাত নাযিল হবে। আল্লাহর নিকট উদ্যম ও উদ্যোগহীন ইচ্ছা-ইরাদার কোনই মূল্য নেই। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাকে হিফাযত করুন, আমীন।

এ পর্যন্ত যা কিছু বলা হলো তার খোলাছা এই যে, আল্লাহ তা‘আলা বান্দার জন্য মাগফিরাতের সব পথই খোলা রেখেছেন। অর্থাৎ ছাগীরা গোনাহের মাগফিরাতের জন্য তিনি নেক আমলের ওছিলা রেখেছেন। আর যে সকল কবীরা গোনাহের সম্পর্ক আল্লাহর হকের সাথে এবং যেগুলোর ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব নয় সেগুলোর মাগফিরাতের জন্য তাওবার ছুরত রেখেছেন। আর যে সকল কবীরা গোনাহের সম্পর্ক বান্দার হকের সাথে, কিংবা আল্লাহর হকের সাথে, তবে সেগুলোর ক্ষতিপূরণ সম্ভব, সেগুলোর মাগফিরাতের ছুরত এই যে, ইহতিমামের সঙ্গে সেগুলো আদায় করা শুরু করবে এবং সেই সঙ্গে অছিয়তও করে রাখবে যে, আমি যদি সব আদায় করতে না পারি; তার আগেই যদি মৃত্যু এসে যায় তাহলে আমার সম্পত্তি থেকে তা আদায় করবে। এভাবে বান্দা যদি নিজের সামর্থ্যের সবটুকু করে তাহলে আল্লাহর রহমতের কাছে আশা করা যায় যে, আখেরাতে তার মাগফিরাতের ব্যবস্থা হবে।

গোনাহের চাহিদা গোনাহ নয়

হাকীমুল উম্মত হযরত থানবী (রহ) পরবর্তী এক মালফূযে বলেছেন, স্বভাবগত বিষয়গুলোর উপর কোন পাকড়াও নেই, তবে স্বভাবের চাহিদামতে কিছু করা হলে পাকড়াও হবে, আর সেটাও যদি ইচ্ছাকৃত হয় তাহলে। কিন্তু যদি স্বভাবগত রুষ্টতার কারণে আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অসঙ্গত কোন কথা মুখ থেকে বের হয়ে যায়, আর সেজন্য মাফ চেয়ে নেয় তাহলে আল্লাহ তা‘আলা সেটাও মাফ করে দেবেন। (আনফাসে ঈসা, ১৯৮) এখানে হযরত (রহ) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মূলনীতি বর্ণনা করেছেন, যার সারসংক্ষেপ এই যে, গোনাহ সাধারণত ঘটে থাকে (মানুষের ভিতরে রেখে দেয়া) স্বভাবগত চাহিদা ও উত্তেজক শক্তির কারণে, অথবা এজন্য যে, মানুষের ভিতরে যে মন্দ চরিত্র রয়েছে সেগুলো তাকে গোনাহের দিকে প্ররোচিত করে। এখন কেউ কেউ মনে করে যে, মনের মধ্যে গোনাহের চাহিদা ও উত্তেজনা পয়দা হওয়াটাই গোনাহ। এ ভুল ধারণা দূর করে আমাদের হযরত বলছেন যে, দিলের মধ্যে গোনাহের চাহিদা ও তাকাযা পয়দা হওয়া গোনাহ নয়। কারণ তাতে মানুষের ইচ্ছা ও ইখতিয়ারের দখল নেই। হাঁ গোনাহের চাহিদা পয়দা হওয়ার পর সেই চাহিদামতে কাজ করাটা হলো গোনাহ। চাহিদা পয়দা হওয়ার পর সেই চাহিদাকে দমন করার চেষ্টা করা, সে তো আলাদা ছাওয়াবের কাজ। প্রথম উদাহরণ, ক্রোধ ও তার চাহিদা উপরে হযরত (রহ) যে গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতিটি বর্ণনা করেছেন তার উদাহরণ হিসাবে আমরা ক্রোধের বিষয় উল্লেখ করতে পারি। মানুষের ভিতরে যতগুলো মন্দ স্বভাব রয়েছে তার মধ্যে সবচে’ জঘন্য হলো ক্রোধের স্বভাব। এই ক্রোধ মানুষের অন্তর্জগতের ভালো সমস্ত গুণকে নিষ্ক্রিয় ও বরবাদ করে দেয়। তাই তাসাওউফ ও তরীকতের পথে ক্রোধের চিকিৎসা এবং গোছ্‌ছার ইলাজই সবার আগে করা হয়। আল্লাহর কোন বান্দা যখন নিজের ইছলাহ ও সংশোধনের জন্য শায়খের কাছে নিজেকে অর্পণ করেন তখন সবার আগে তিনি তাকে শিক্ষা দেন, কীভাবে ক্রোধ সম্বরণ করতে হয়, কোন্‌ উপায়ে গোছ্‌ছাকে কাবুতে রাখতে হয়।

কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, তাছাওউফ ও তরীকতে যে ইলাজ ও চিকিৎসা করা হয় তার উদ্দেশ্য মানুষের ভিতর থেকে ক্রোধের স্বভাব ও গোছ্‌ছার তবিয়তকে নির্মূল করা নয় এবং তা সম্ভবও নয়। কারণ স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা মানুষের মধ্যে এ স্বভাব রেখেছেন। সুতরাং শত চিকিৎসা ও শত মুজাহাদার পরো গোছ্‌ছা আসতে পারে। সেটা খারাপ কিছু নয় এবং গোনাহ নয়। হাঁ, গোছ্‌ছার কারণে যদি তুমি কারো উপর অন্যায়, অবিচার করো, কারো হক নষ্ট করো তবে সেটা হবে গোনাহ।

তরীকতের সমস্ত চিকিৎসা ও ইলাজের একমাত্র মাকছাদ এই যে, গোছ্‌ছা আসার পর মানুষ যেন সেটাকে কাবুতে রাখতে পারে। ক্রোধে আত্মহারা হয়ে মানুষ যেন কোন অন্যায় করে না ফেলে। দ্বিতীয় উদাহরণ, শাহওয়াত ও তার চাহিদা ক্রোধ ও গোছ্‌ছার পর মানুষের ভিতরে দ্বিতীয় যে মন্দ স্বভাবটি রয়েছে তা হলো শাহওয়াত ও প্রবৃত্তি।

আল্লাহর কোন বান্দা যখন তরীকতের শায়খের কাছে নিজেকে অর্পণ করে তখন তিনি এ বিষয়টির প্রতিও খুব গুরুত্ব দেন এবং অতি কঠিন মুজাহাদার মাধ্যমে এর ইলাজ ও চিকিৎসা করেন। তবে সেটার উদ্দেশ্য শাহওয়াত ও প্রবৃত্তিকে নির্মূল করা নয়, বরং দমন করা, যাতে তা গোনাহের কারণ না হয়। তো এক্ষেত্রেও একই কথা। দিলের মধ্যে শাহওয়াত ও প্রবৃত্তি পয়দা হওয়া গোনাহ নয়, বরং এটা স্বাভাবিক। কিন্তু কেউ যদি ইচ্ছা করে শাহওয়াত ও প্রবৃত্তির খেয়াল দিলের মধ্যে জাগ্রত করে এবং ইচ্ছা করে তা দিলের মধ্যে লালন করে এবং এমন কিছু করে, যা শরীয়াতের দৃষ্টিতে না-জায়েয তাহলে সে গোনাহগার হবে। যেমন, যা দেখা জায়েয নয়, দেখলো, যা শোনা জায়েয নয়, শুনলো, যা বলা জায়েয নয়, বললো এবং যা করা জায়েয নয় তা করলো তাহলে সেটা হবে কবীরা গোনাহ। এভাবেই মানুষের চোখ যিনা করে, যবান যিনা করে এবং দেমাগ যিনা করে।

পক্ষান্তরে কেউ যদি শাহওয়াত প্রবৃত্তিকে দমন করার চেষ্টা করে, চোখের দৃষ্টি উঠতে চায়, কিন্তু চোখ নামিয়ে রাখে, কান শুনতে চায়, কিন্তু কানকে বিরত রাখে, যবান বলতে চায়, কিন্তু যবানকে বিরত রাখে, দেমাগ চিন্তা করতে চায়, কিন্তু চিন্তাকে সরিয়ে রাখে তাহলে তো ইনশাআল্লাহ শাহওয়াত ও প্রবৃত্তি দমনের এ চেষ্টাটাই হবে বিরাট আজর ও ছাওয়াবের কাজ। মানুষের ভিতরের সকল ব্যাধি ও মরয এবং সকল খবীছ ও মন্দ স্বভাব সম্পর্কে একই কথা।

তৃতীয় উদাহরণ, হাসাদ ও তার চাহিদা একই ভাবে হাসাদ ও হিংসা হচ্ছে মানুষের ভিতরের খুবই মন্দ স্বভাব। মনে করুন, আপনার দিলে কারো প্রতি হাসাদ ও হিংসা আছে। তার ভালো কিছু দেখলে, বা তার সম্পর্কে ভালো কিছু শুনলে আপনার কষ্ট হয় যে, কেন তার এত উন্নতি হচ্ছে? কেন দিন দিন তার সম্পদ, সম্মান, খ্যতি ও প্রতিপত্তি বেড়ে যাচ্ছে? মানুষ কেন তাকে এত ভালোবাসে, এত শ্রদ্ধা করে? তো দিলে শুধু এই চিন্তা-খেয়াল এসে যাওয়াটা গোনাহ নয় এবং এ জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে কোন পাকড়াও হবে না। কারণ দিলের উপর মানুষের এই ক্ষমতা নেই যে, তাতে কোন চিন্তা আসতেই পারবে না। হাঁ, গোনাহ হবে, যখন তুমি ঐ সব চিন্তা আসার পর তুমি তার প্রতি কোন অন্যায় আচরণ করলে, তার পথে বাধা সৃষ্টি করলে, তার বদনাম ও গীবত করলে। তখন সেটা গোনাহ হয়ে গেলো। কারণ তুমি হাসাদ ও হিংসার চাহিদামতে কাজ করে ফেলেছো। মোটকথা, হাসাদ ও হিংসার চিন্তা দিলে আসাটা গোনাহ নয়, আচরণে তার প্রকাশ ঘটা হলো গোনাহ।

হাসাদের ইলাজ ও চিকিৎসা

ইমাম গাজ্জালী (রহ) বলেন, যদি কারো সম্পর্কে দিলে হাসাদ ও হিংসা এসে পড়ে তাহলে তার উচিত হবে সঙ্গে সঙ্গে দু’টি কাজ করা। নচেৎ তার গোনাহে লিপ্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রথমত মনের এ চিন্তাটাকে মন্দ মনে করবে এবং নিজেকে খুব তিরস্কার করবে যে, আমার মনে অমুক সম্পর্কে যে চিন্তা আসছে তা খুবই খারাপ এবং অন্যায়। তারপর আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করবে, হে আল্লাহ, আমার অন্তর থেকে এ মন্দ চিন্তা দূর করে দিন।

দ্বিতীয়ত যার সম্পর্কে মন্দ চিন্তা আসছে তার জন্য কল্যাণের দু‘আ করবে এবং যে বিষয়ে হাসাদ হবে সে বিষয়েই তার জন্য নেক দু‘আ করবে। যেমন কারো খ্যাতি ও প্রতিপত্তিতে হাসাদ হলে এই দু‘আ করবে, হে আল্লাহ, তাকে আরো খ্যতি ও প্রতিপত্তি দান করুন। কারো সৌন্দর্যে হিংসা হচ্ছে, তখন দু‘আ করবে, হে আল্লাহ, তার সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিন। এভাবে দু‘আ করার সময় মনে হবে, দিলের মাঝখান দিয়ে যেন করাত চলছে, তখন ভীষণ কষ্ট হবে, তবু করাত চালাতে হবে। কারণ এই করাত চালানোই হলো হাসাদ ও হিংসার চিকিৎসা।

যখনই দিলে কারো প্রতি হাসাদ ও হিংসার ভাব আসবে তখন এ দু’টি কাজ অবশ্যই করবে, নচেৎ যে কোন সময় এটা তোমাকে বরবাদ করে দিতে পারে। হাসাদ ও হিংসা এত বড় খতরনাক রোগ যে, তা মানুষের দুনিয়া-আখেরাত সব বরবাদ করে দেয়। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে হিফাযাত করুন, আমীন। মোটকথা, মানুষের ভিতরে যত মন্দ স্বভাব ও খারাপ চরিত্র রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে হযরত থানবী (রহ) একটি মূলনীতি বলে দিয়েছেন যে, স্বভাবজাত বিষয়গুলোর উপর কোন পাকড়াও নেই, পাকড়াও হবে শুধু স্বভাবের চাহিদামতে কাজ করলে। তারপর আবার বলেছেন, ‘সেটাও তখন হবে যখন কাজটি ইচ্ছাকৃত করা হবে।’ যদি অনিচ্ছায় ঘটে যায়, আর সে লজ্জিত হয় তাহলেও সে আল্লাহর পাকড়াও থেকে বেঁচে যাবে।

স্বভাবক্রোধের কারণে মুখ ফসকে বের হওয়া কথা

এখানে হাকীমুল উম্মত হযরত থানবী (রহ) অত্যন্ত ‘ছাড় দেয়া’ একটি কথা বলেছেন। তা এই যে, স্বভাবগত রুষ্টতার কারণে কখনো যদি কোন অসঙ্গত কথা মুখ ফসকে বের হয়ে যায় এবং পরে সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করে তাহলে আল্লাহ তা‘আলা মাফ করে দেবেন। এভাবে অসঙ্গত কথা মুখ ফসকে বের হয়ে যাওয়া, বা অসঙ্গত কোন আচরণ প্রকাশ পেয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এটা যে কারো থেকেই হতে পারে। মনে করুন এক ব্যক্তি কোন আল্লাহওয়ালার ছোহবত ও তার ইলাজ দ্বারা আত্মসংযমের গুণ অর্জন করেছে। তার ক্রোধ এখন নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে, কিন্তু কখনো কখনো তার ক্রোধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, অসন্তোষজনক কিছু দেখলে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং মুখ ফসকে অসঙ্গত কোন কথা বের হয়ে যায়। এটা হতে পারে, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এক্ষেত্রে কর্তব্য হলো সঙ্গে সঙ্গে মাফ চেয়ে নেয়া। কিন্তু এটা ভাবা উচিত নয় যে, আমার ক্রোধ ও গোছ্‌ছার ইলাজ আর হবে না। এটা আর সংশোধনের যোগ্য নয়। এটা ভুল চিন্তা। আসল কর্তব্য হলো চিকিৎসা করতে থাকা এবং চেষ্টা অব্যাহত রাখা।

এক ছাহাবীর ঘটনা হাদীছ শরীফে আছে, এক ছাহাবী নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খিদমতে হাযির হয়ে আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমাকে নছীহত করুন এবং মুখতাছার নছীহত করুন। এভাবে শর্ত লাগিয়ে নছীহত চাওয়া সত্ত্বেও নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসন্তুষ্ট হলেন না, বরং তিনি ছাহাবীর চাহিদা মুতাবেকই নছীহত করলেন। এতে আমাদের জন্য বিরাট শিক্ষা রয়েছে যে, কেউ যদি মুখতাছার নছীহত চায় তাহলে তাকে মুখতাছার নছীহতই করা উচিত। কারণ হতে পারে তার সময় অল্প, তাই সে অল্প সময়ে দ্বীনের কোন কথা জানতে চায়। আর অল্প সময়ে জানার মত দ্বীনী কথা অনেক রয়েছে। তো ঐ ছাহাবীর আব্দার -মত নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে মাত্র একটি শব্দে নছীহত করলেন- لا تغضب (ক্রদ্ধ হয়ো না)। এতে বোঝা যায় যে, ক্রোধের বিষয়টি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এতই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো যে, মুখতাছার নছীহত করার সময় তিনি এটাকেই নির্বাচন করেছেন।

শুরুতে ক্রোধ একেবারেই ছেড়ে দাও

এ কারণে আমাদের হযরত হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী (রহ)-এর তরীকায় সবকিছুর আগে ক্রোধের চিকিৎসা করা হয়। কেউ যখন নিজের সংশোধনের জন্য শায়খের খিদমতে হাযির হয় তখন শুরুতেই তাকে বলা হয়, তুমি রাগ করা একেবারেই ছেড়ে দাও। অন্যায়ভাবে তো রাগ করবেই না, এমনকি রাগের ক্ষেত্রেও রাগ করবে না। এতে একসময় তোমার স্বভাব ও তাবিয়ত ভারসাম্যের অবস্থায় এসে যাবে। তবে এসব চেষ্টা সত্ত্বেও যদি কখনো রাগের বশে কোন অসঙ্গত কথা মুখ ফসকে বের হয়ে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে মাফ চেয়ে নাও যে, ভাই, আমার ভুল হয়ে গেছে, মাফ করে দাও। যখন এভাবে চলতে থাকবে তখন ইনশাআল্লাহ সামনে চলার পথ তোমার জন্য খুলতে থাকবে। মাফ চাইতে লজ্জা করো না মাফ চাওয়ার মধ্যে যিল্লতির কিছু নেই। কারো কারো মনোভাব এই যে, জান যায় যাক, তবু আমার নাকটা যেন উঁচু থাকে। অর্থাৎ মাফ চাওয়ার মানে হলো নিজেকে ছোট করা।

এ ধরনের চিন্তা তো অহঙ্কার, আর অহঙ্কার বা তাকাব্বুর হলো বড়ই খতরনাক। সুতরাং এসব চিন্তাকে মনে স্থান না দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে মাফ চেয়ে নেবে এবং মনকে বোঝাবে যে, আল্লাহ না করুন, যদি দুনিয়াতে মাফ না চাই, আর আখেরাতে হিসাব দিতে হয় তাহলে তো ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে! এভাবে যদি দুনিয়ার যিন্দেগিতে আমাদের মধ্যে মাফ চাওয়ার এবং মাফ করে দেওয়ার অভ্যাস হয়ে যায় তাহলে ইনশাআল্লাহ আখেরাতের যিন্দেগিতে আমরা আল্লাহর কাছে মাফ পেয়ে যাবো এবং হিসাব কিতাবের কঠিন মারহালা সহজে পার হয়ে যাবো। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে এই কথাগুলোর উপর আমল করার তাওফীক দান করুন, আমীন।

ভাষান্তর : আমাতুল্লাহ তাসনীম সাফফানা

পূর্ববর্তি সংবাদগ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কমাবে ৫ খাবার
পরবর্তি সংবাদকাদিয়ানি ইজতেমা বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ চাইলেন আল্লামা আহমদ শফী