ইসলাম টাইমস ডেস্ক : এবার মোটরযান আইনে গ্রেফতার হলেন সাতক্ষীরার সংরক্ষিত আসনের এমপিপুত্র রাশেদ সরোয়ার রুমন।
রোববার সকালে শহরের বেনেরপোতায় একটি মাছের ঘের এলাকা থেকে মাদকাসক্ত অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। তখন রাশেদ সরোয়ার রুমন তার মা সংসদ সদস্য মিসেস রিফাত আমিনের ব্যবহৃত স্টিকারযুক্ত গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। গাড়িতে লাগানো ছিল সাংবাদিকের স্টিকারও।
সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রুমন মোটরযান আইনের একটি মামলায় পলাতক ছিলেন। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এর আগে গত ১৯ নভেম্বর রুমনকে সাতক্ষীরার নবাদকাটির একটি বাগানবাড়ি থেকে ইয়াবা সেবন করে বেসামাল অবস্থায় আটক করা হয়। তার সঙ্গে ছিল আরও পাঁচ মাদকাসক্ত যুবক। পরে তার মা সাতক্ষীরা সংরক্ষিত মহিলা আসন ৩১২ এর সংসদ সদস্য রিফাত আমিনের সুপারিশে পুলিশ রুমন ও তার সহযোগীদের ছেড়ে দেয়।
এছাড়া দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর রাশেদ সরোয়ার রুমন দেশে ফিরে জড়িয়ে পড়েন নানা অপরাধে। ২০১৪ সালে সংসদ নির্বাচনের পর তার মা রিফাত আমিন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হওয়ার পর তার দাপট আরও বেড়ে যায়। একের পর এক ঘটনা ঘটাতে থাকেন তিনি।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৯ মে রুমন তার মায়ের লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ও গুলি নিয়ে সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ড্রাইভ করে যান শ্যামনগরের বরসা রিসোর্টে। রাতে সেখানে তিনি তিন তরুণীকে নিয়ে টালমাটাল অবস্থায় ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে। এ ঘটনায় তাকে কয়েকদিনের জন্য কারাবাস করতে হয়। যানবাহন আইনে তার বিরুদ্ধে একটি নামমাত্র মামলা হয়।
রুমন ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা চায়। পরে ভোমরায় নিয়ে তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় ২৫ হাজার টাকা। ওই বছরের ৭ জুলাই রুমন তার সহযোগী গোল্ড মিলনের সঙ্গে জোট বেধে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ী সাহেব আলিকে মারধরের পর জিম্মি করে নগদ টাকা ও একটি স্বাক্ষরিত চেক কেড়ে নেয়।
একই বছরের ১৩ আগস্ট তার মাদকাসক্ত স্ত্রী টুম্পাকে সিরাজুল ইসলাম বুলেট নামের এক যুবকের পাশে বসিয়ে ছবি তুলে ব্লাক মেইলিং করার চেষ্টা করেন রুমন। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রুমন জেলা যুবলীগ নেতা জুলফিকার আলি উজ্জ্বলকে রড দিয়ে মারপিট করে আহত করে।
এরপরই নেশা করে গণরোষের মুখে প্রাইভেটকার ড্রাইভ করে ভোমরার দিকে পালিয়ে যাবার পথে একটি কালভার্টে আঘাত করে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন রুমন। এ সময় পালিয়ে যান রুমন।
২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার গোল্ড মিলন স্বর্ণ চোরাচালান মামলায় আটক হলে রুমন তার সঙ্গীদের নিয়ে তার বাগানবাড়ি দখল করতে যান। এ সময় স্থানীয়রা তাকে গনপিটুনি দেয়। ওইদিন ওই বাড়িতে থাকা সোনা টাকা ও ১৩টি ভারতীয় গরু লুট করে নিয়ে যাবার অভিযোগ ওঠে রুমন ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় দুটি মামলা হলেও কেউ তাকে আটকে রাখতে পারেনি।
