ডিভাইসের মাধ্যমে ভোট কারচুপি করা যায় ইভিএম মেশিনে, দাবি ঐক্যফ্রন্টের

ইসলাম টাইমস ডেস্ক : ডিভাইসের মাধ্যমে দূর থেকে ভোট কারচুপি করার সুযোগ আছে ইভিএম মেশিনে। জনগণ ইলেক্ট্রিনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম চায় না। কারণ ইভিএম যারা এনেছেন তারাও ব্যবহার করতে জানেন না। আর যারা ভোট দেবেন তারা এখনো তা দেখেননি। জনগণ এই ইভিএম প্রতিরোধ করবে বলেছে- জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ইভিএমকে না বলুন, আপনার ভোটকে সুরক্ষিত করুন’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে ইভিএম প্রকৌশলীরা ইভিএম দিয়ে কিভাবে ভোট কারচুপি করা যায় তা চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন। তাদের যুক্তি, যেকোনো ডিভাইসের মাধ্যমে দূর থেকে ভোট কারচুপি করার সুযোগ আছে ইভিএম মেশিনে। এই মেশিনের মাধ্যমে একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারে।

এই পদ্ধতিতে প্রিসাইডিং অফিসার নিজেই কারো সহযোগিতা ছাড়া প্রতি ঘণ্টায় ১শ ভোট দিতে পারবেন বলে উল্লেখ করেন প্রকৌশলীরা।

সেমিনারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচন কমিশন নিজ থেকে সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে বসে আছে। এ কারণে জনগণের কথা তাদের কানে যাচ্ছে না। এজন্য রাজনৈতিক দেউলিয়া হয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ আবারও জোর করে ক্ষমতায় আসার জন্য অপকৌশল করছে। জনগণের উপর আস্থা না থাকলে এরকম করে। জনগণ ভোট কারচুপি প্রতিহত করবে।

জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব ইভিএম ব্যবহার সংবিধান বিরোধী দাবি করে বলেন, ইভিএম ব্যবহার করা হলে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সংবিধান লংঘনের দায়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

তিনি বলেন, সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদ-এর ২/এ তে আছে, বাংলাদেশের সংসদ গঠিত হবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে৷ ইভিএম মেশিনে প্রত্যক্ষ ভোট হবে না। তাই সংবিধান সংশোধন করা ছাড়া ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না। বাংলাদেশে এই ইভিএম ব্যবহার করা গণতন্ত্র বিরোধী, রাষ্ট্রদ্রোহী।

‘সেনাবাহিনীকে দিয়ে এই সংবিধান বিরোধী কাজ করিয়ে তাদেরকে বিতর্কিত করবেন না৷ ইভিএম কারা তৈরি করেছে, এই মেশিন কোথা থেকে অপারেট করা হবে জনগণ জানে না। এটা ব্যবহার করা যাবে না। করলে সংবিধান লংঘনের দায়ে মামলা করা হবে।’

কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমরা ইভিএম চাই না। কারণ ইভিএম যারা এনেছেন তারাও ব্যবহার করতে জানেন না। আর যারা ভোট দেবেন তারা এখনো তা দেখেননি।

‘একজন নাগরিকের ইচ্ছেমতো ভোট দেয়ার অধিকার আছে। যারা ইভিএম দেখেননি, তারা ভোট দিলে তাদের ভোট যে প্রয়োগ হবে তার নিশ্চয়তা নেই। জনগণ এই ইভিএম প্রতিরোধ করবে।’

নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা প্রধানত নির্বাচনে যেতে চাই৷ আমরা একটি বস্তুনিষ্ঠ নির্বাচন চাই। তার জন্য ইভিএম চাইনা। সরকার নির্বাচন কারচুপি করার চেষ্টা করলে জনগণের অভ্যুত্থান হবে বলেও হুমকি দেন মান্না।

ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশনকে তো এখনো খোদাভক্ত মনে হচ্ছে। আশা করি তাদের বিবেক জাগ্রত হবে৷ তিনি বলেন, বেশি চালাকি করবেন না। উল্টাপাল্টা কিছু করলে পরে বাড়িতে নিজের মুখটি লুকিয়ে রাখতে হবে।

একাদশ জাতীয় সংসদকে সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আয়োজনে এই সেমিনার শুরু হয় বিকেল ৩টায়। সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ড. আব্দুল মঈন খান, গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরীসহ ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন এবং বিভিন্ন পেশাজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তি সংবাদসিরাজদিখানে টেঁটাযুদ্ধে আহত ৩০
পরবর্তি সংবাদরাজনীতি এখন বড় ব্যবসা : সিপিডি